আবুধাবির মরুভূমিতে শেষ পর্যন্ত মর্যাদা রক্ষা করতেও পারল না বাংলাদেশ। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটে-বলে সম্পূর্ণ ব্যর্থতায় ২০০ রানের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা বরণ করল লাল-সবুজরা।
২৯৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ২৭.১ ওভার টিকতে পেরেছে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে লজ্জাজনকভাবে দল থেমেছে ৯৩ রানে। আগের ম্যাচে কোনোমতে ১০৯ রান তুলেছিল টাইগাররা—এবার সেটিও পারল না।
এক সাইফ হাসান ছাড়া বাকিদের ব্যাট ছিল নিস্তব্ধ। দলের একমাত্র উজ্জ্বল দিক তিনি। ওপেনিংয়ে নেমে ৫৪ বলে ৪৩ রান করেন সাইফ, যেখানে ছিল ৩ ছক্কা ও ২ চার। কিন্তু তার সঙ্গী বা পরের ব্যাটাররা কেউই দাঁড়াতে পারেননি রশিদ খান ও তরুণ পেসার বিলাল সামির তোপের মুখে।
মোহাম্মদ নাঈম (৭), নাজমুল হোসেন শান্ত (৩), তাওহীদ হৃদয় (৭), মিরাজ (৬), শামীম (০), সোহান (৪)—একজনও দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। টপ অর্ডারের ধসের পর টেলএন্ডাররা কোনোভাবে স্কোরকে ৯৩ রানে নিয়ে গেছেন, সেটিই ছিল সর্বোচ্চ সান্ত্বনা।
হোয়াইটওয়াশ লজ্জায় বাংলাদেশ, একশও ছুঁতে পারলেন না মিরাজরা
হোয়াইটওয়াশ এড়াতে মিরাজদের সামনে বিশাল লক্ষ্য
আফগানিস্তানের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন তরুণ বিলাল সামি। মাত্র ৩৩ রান খরচায় ৫ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন ধ্বংস করে দেন তিনি। রশিদ খানও ছিলেন আগের মতোই অপ্রতিরোধ্য—১২ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। আগের ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়ার পর এবার তিনিও ছুঁয়ে ফেলেছেন সিরিজে ১১ উইকেটের মাইলফলক।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৯৩ রান তোলে আফগানিস্তান। ইব্রাহিম জাদরান খেলেন ৯৫ রানের দারুণ ইনিংস, আর শেষ দিকে ঝড় তোলেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী—৩৭ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন সাইফ হাসান, ২টি করে উইকেট তানভীর ইসলাম ও হাসান মাহমুদের ঝুলিতে।
এই জয়ে রানের ব্যবধানে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয় পেল আফগানিস্তান—২০০ রানের বিশাল ব্যবধানে। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি তাদের সবচেয়ে বড় জয়ও বটে।
একই সঙ্গে টানা তৃতীয় ওয়ানডে সিরিজেও টাইগারদের হারাল আফগানরা। আগের দুই সিরিজে বাংলাদেশ এক ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পেরেছিল; কিন্তু এবারে লড়াইয়ের ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না—ব্যাটিং ব্যর্থতা, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি আর কৌশলহীনতার এক নির্মম প্রতিচ্ছবি হয়ে রইল এই সিরিজ।