নিশান্ত চৌধুরী
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন আওয়ামী লিগকে বাদ দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে তা হবে এক ধরনের ভাওতাবাজি। জয় আরও বলেছেন, সেই নির্বাচন হবে অর্থহীন এবং তাতে দেশে অস্থিরতা চলতেই থাকবে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তাই হাসিনা পুত্রের পরামর্শ যত দ্রুত সম্ভব আওয়ামী লিগের কার্যকলাপের ওপর জারি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক। জয়ের বক্তব্য, আওয়ামী লিগকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে দেওয়া হচ্ছে না। শেষ মুহূর্তে অনুমতি দিলে সেই নির্বাচন হবে প্রহসনের ভোট।
বেশ কয়েক মাস পর আওয়ামী লিগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার পুত্র জয় একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। গত বছর পাঁচ অগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর জয় বেশ কিছুদিন সংবাদমাধ্যমে সরব ছিলেন। তারপর তিনি চুপ করে যান। আওয়ামী লিগ সূত্রে খবর, মায়ের পরামর্শেই জয় সংবাদ মাধ্যমকে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। দীর্ঘদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা জয় কয়েক মাস আগে দিল্লি এসে মা ও বোন সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে ইদ কাটিয়ে গিয়েছেন। দিন সাতেক দিল্লিতে থাকলেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি। যদিও দলের নবীন নেতৃত্ব বারে বারেই চাইছে জয় এবং পুতুল দলে আরও সক্রিয় হন। দু’জনেই আড়ালে দলের প্রচার এবং সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখভাল করছেন। দিল্লিতে থাকায় পুতুল মায়ের রাজনৈতিক কাজকর্মে সহযোগিতা করছেন নিয়মিত। আওয়ামী লিগের তরুণ ও মাঝবয়সি নেতৃত্ব চাইছে হাসিনার পুত্র, কন্যারা প্রকাশ্যে দলের কাজে সক্রিয় হন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে জয়ের সাক্ষাৎকার দেওয়ার সিদ্ধান্তে তাই নবীর নেতৃত্ব খুশি। তারা জানাচ্ছেন, সজীব ওয়াজেদ জয় দলে আরও সক্রিয় হবেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাঁর পাসপোর্টটি বাতিল করায় জয় বর্তমানে আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়েছেন। মার্কিন পাসপোর্ট নিয়েই তিনি দিল্লি সফরে এসেছিলেন।
সাক্ষাৎকারে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আওয়ামী লিগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন হাসিনা পুত্র। তিনি বলেছেন, এই দলকে বাদ দিয়ে কোনও নির্বাচন হলে তা ভাঁওতাবাজি ছাড়া কিছুই হবে না। সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে ব্যর্থ হয়, তবে বাংলাদেশ রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীলই থাকবে। তাঁর কথায়, নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। নির্বাচনকে অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্বাধীন ও সুষ্ঠু করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন যা ঘটছে, তা আসলে আমার মা ও আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা। এটা হচ্ছে ন্যায়বিচারের ছদ্মবেশে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো।’ বাংলাদেশে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর সেটাই হবে প্রথম সংসদ নির্বাচন।
