গ্রহটি নিজের সূর্যের খুব কাছেও নয় আবার দূরেও নয়। ফলে গ্রহটির পৃষ্ঠে তরল পানি থাকতে পারে বলে ধারণা গবেষকদের। ২০ বছরের বেশি সময়ের তথ্য ব্যবহার করে এ আবিষ্কারটি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
এলিয়েনের প্রমাণ মিলতে পারে এমন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে সম্প্রতি আবিষ্কৃত এক ‘সুপার-অর্থ’ – এমনই দাবি বিজ্ঞানীদের।
নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটির নাম ‘জিজে ২৫১ সি’ এবং পৃথিবী থেকে ২০ আলোকবর্ষেরও কম দূরত্বে অবস্থিত। যেসব গ্রহ আমাদের পৃথিবীর মতো পাথুরে কিন্তু অনেক বড় সেগুলোকে ‘সুপার-অর্থ’ বলে।
বিজ্ঞানীরা এ ধরনের গ্রহকে পৃথিবীর বাইরে অন্য কোথাও এলিয়েন খোঁজার জন্য তাদের সবচেয়ে বড় সুযোগ হিসেবে দেখেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
নতুন গ্রহটি ‘গোল্ডিলকস জোন’-এ অবস্থান করছে, অর্থাৎ গ্রহটি নিজের সূর্যের খুব কাছেও নয় আবার দূরেও নয়। ফলে গ্রহটির পৃষ্ঠে তরল পানি থাকতে পারে বলে ধারণা গবেষকদের।
বিজ্ঞানীরা এ আবিষ্কারটি করেছেন ‘হ্যাবিটেবল-জোন প্ল্যানেট ফাইন্ডার’ নামের বিশেষ এক যন্ত্র ব্যবহার করে। যন্ত্রটি এমন বিভিন্ন গ্রহকে খুঁজে বের করতে পারে, যেটি ‘প্রাণ থাকার অবস্থার জন্য উপযোগী দূরত্বে’ রয়েছে।
গবেষকদের ধারণা, এলিয়েন খোঁজার জন্য এখন পর্যন্ত তারা যেসব রোমাঞ্চকর সম্ভাবনা পেয়েছেন তার মধ্যে একটি হতে পারে এ গ্রহ।
২০ বছরের বেশি সময়ের তথ্য ব্যবহার করে এ আবিষ্কারটি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এজন্য বিভিন্ন টেলিস্কোপ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন তারা। তাদের মূল আগ্রহের বিষয় ছিল গ্রহটির ‘দোলন’। এ হালকা আন্দোলন বা নড়াচড়ার বিষয়টি কক্ষপথে থাকা কোনো গ্রহের আকর্ষণশক্তির কারণে ঘটে।
প্রথমে ‘জেজি ২৫১ বি’ নামের গ্রহ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে এসব তথ্য ব্যবহার করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে আরও বিশদভাবে পরীক্ষার পর জানা গেল সেখানে আরেকটি বড় আকারের গ্রহও রয়েছে। পরে নিশ্চিতভাবেই গ্রহটি খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা।
সরাসরি গ্রহটিকে না দেখতে পেলেও গবেষকরা অনুমান করছেন, ভবিষ্যতের বিভিন্ন টেলিস্কোপ এমন সক্ষমতা দেবে, যাতে তারা গ্রহটি দেখতে পারেন।
‘পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক সুভারথ মহাদেবন বলেছেন, “আমরা এখনও জেজি ২৫১ সি-তে বায়ুমণ্ডল বা প্রাণের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারিনি। তবে এ গ্রহটি ভবিষ্যতে গবেষণার জন্য আশা জাগানিয়া লক্ষ্য হতে পারে।
“আমরা রোমাঞ্চকর এক আবিষ্কার করেছি। তবে এ গ্রহ সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানা বাকি রয়েছে আমাদের।”
‘ডিসকভারি অফ এ নিয়ারবাই হ্যাবিটেবল জোন সুপার-আর্থ ক্যান্ডিডেট অ্যামেনেবল টু ডাইরেক্ট ইমেজিং’ শিরোনামে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল দ্য ‘অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল’-এ।
