
।। মহিউদ্দিন আহমদ ।।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক এখন টক অব দ্য টাউন। কারণ, তিনি একটি অনুষ্ঠানে তথ্যবোমা ফাটিয়েছেন। সম্প্রতি বিবিসির ‘হার্ডটক’ অনুষ্ঠানে সঞ্চালক স্টিফেন স্যাকার গাজা, সুদান, ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে ফলকার টুর্কের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন, আন্তর্জাতিক আইন ও মূল্যবোধ মেনে এসব পরিস্থিতি সমাধানে জাতিসংঘকে ক্ষমতাহীন মনে হচ্ছে। এর জবাবে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে ফলকার টুর্ক বলেন, ‘আমি গত বছরের বাংলাদেশের উদাহরণ দিচ্ছি।
আপনি জানেন, জুলাই-আগস্টে সেখানে ছাত্রদের ব্যাপক বিক্ষোভ হয়।’ ‘বাংলাদেশে তখন শেখ হাসিনার সরকার ছাত্রদের আন্দোলন দমনে ব্যাপক নিপীড়ন চালিয়েছিল’—এ কথা উল্লেখ করে ফলকার টুর্ক বলেন, ‘আমরা কী বলি, আমরা কী করতে পারি এবং আমরা ওই পরিস্থিতি কীভাবে দেখি, সেটি নিয়ে তাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। আমরা প্রকৃতপক্ষে সেনাবাহিনীকে সতর্ক করি—যদি তারা এতে জড়িত হয়, তার অর্থ হবে, তারা হয়তো আর শান্তিরক্ষী পাঠানোর দেশ থাকতে পারবে না। ফলে আমরা পরিবর্তন দেখলাম।’
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রতি সতর্কবার্তার ইঙ্গিত আছে। প্রতিবেদনটিতে নিয়মবহির্ভূত বলপ্রয়োগে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে ১৩৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের কারণে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে—এমন আশঙ্কা, যা বিক্ষোভ চলাকালে জাতিসংঘ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল। সেটি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিতে সেনা কর্মকর্তাদের অনাগ্রহী করে তোলে।’ জাতিসংঘের নীতি অনুযায়ী, যাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনে যুক্ত থাকার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে, সেসব প্রার্থীকে শান্তি রক্ষা বা জাতিসংঘের অন্য কোনো কার্যক্রমে রাখা হয় না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অনুচ্ছেদটিতে। (সূত্র: ‘বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ, কতটা চাপ তৈরি করেছিল’, তোয়াহা ফারুক, বিবিসি নিউজ বাংলা, ৭ মার্চ ২০২৫)
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে একটা বড় ধরনের ওলট-পালট ঘটে যায়। শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। হাসিনা গোপনে দেশ ছাড়েন। ওই সময় আসলে কী ঘটেছিল?