ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫: জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ওসমান হাদির জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। জানাজা শেষে ঢা্কা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গনে মরদেহ দাফন করা হয়।
গত ১২ ডিসেম্বর নিজ দলের এক কর্মী ও নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গীর গুলিতে মাথায় আহত হন হাদি। প্রথমে এভারকেয়ার হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও তাঁর জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
হাদির মৃত্যুর পর তাঁর অনুসারীরা উন্মত্ত হয়ে ওঠে—প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টারের অফিসে আগুন, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এছাড়া ছায়ানট ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রেও হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় সাংবাদিকরা আহত হন, সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জারি করা বিবৃতিতে এই সহিংসতাকে “বিচ্ছিন্ন উগ্র গোষ্ঠীর” কাজ বলে চিহ্নিত করে কঠোর নিন্দা জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের বিশৃঙ্খলা গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।
তবে সমালোচকরা বলছেন, এই “বিচ্ছিন্ন” চিহ্নিতকরণ দায় এড়ানোর প্রচেষ্টা মাত্র, কারণ সহিংসতাকারীদের অনেকেই হাদির প্রকাশ্য অনুসারী।
দেশবাসীর একাংশ হাদির মৃত্যুতে শোকাহত হলেও, অধিকাংশই উদ্বিগ্ন এই অরাজকতা, উগ্রতা আর প্রতিহিংসার ভবিষ্যৎ নিয়ে। শোক প্রকাশের নামে ধ্বংসলীলা কতদিন চলবে, আর কত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হবে—এ প্রশ্ন এখন সবার মনে। আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এই অস্থিরতা দেশকে কোন দিকে নিয়ে যাবে, তা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। জানাজায় উপস্থিত অনেকেই বলেছেন, হাদি চলে গেছেন সবাইকে কাঁদিয়ে, কিন্তু এই কান্না যেন ধ্বংসে পরিণত না হয়।
এদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজা নামাজের পর সংসদ ভবনে প্রবেশ চেষ্টা করেছে অতিউৎসাহী বেশকিছু মানুষ। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বরে) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে হাদির জানাজার নামাজ শেষ হবার পর দৌঁড়ে সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন তারা।
জানাজায় অংশগ্রহণ করতে আসা সংসদ ভবনের পশ্চিম অংশে অবস্থান নেওয়া বেশকয়েকজন শৃঙ্খলা ভেঙে সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বাধা দেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
